|
আলহামদুলিল্লাহি রাবি্বল আলামীন ওয়াসসলাতু ওয়াসসালামু আলা রাসুলিহির কারিম। পবিত্র হজ্ব একটি শ্রেষ্ঠ
ইবাদত। আল্লাহর নৈকট্য লাভের মতো একটি দুর্লভ বিষয় এই হজ্বের দ্বারা সহজসাধ্য হয়। হজ্ব আল্লাহর এবং
বান্দার মধ্যে সব ধরণের দূরত্ব এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করে মহামিলনের এক অপূর্ব পরিবেশ সৃষ্টি করে। হজ্বে মানুষ
হিদায়েত লাভ করে, বেনামাযী নামাযী হয়, অবাধ্য বাধ্য হয় এবং গুনাহগার পাপমুক্ত জীবনের সন্ধান লাভে ধন্য
হয়। যে কাবাকে কিবলা করে এতদিন রুকু ও সাজদা করা হয়েছিল হজ্বে তা বাস্তবতা লাভ করে।
কাবাঘরের দর্শন, মাতাফে দেওয়ানা চক্কর, হজরে আসওয়াদে চুম্বন, ব্যাকুল মনের অশ্রম্নসিক্ত কান্না, আশেক বান্দাদের রোনাজারী, মিনা, আরাফাত ও মুযদলিফায় ইবাদতের পরিবেশ শক্ত পাষাণ হৃদয়কে মোমের মতো গলিয়ে দেয়। পবিত্র হজ্বে ধরা পড়ে নিজের জীবনের অসংখ্য ক্রটি-বিচু্যতি, ভুল, অপরাধ এবং অন্যায়। তাওবার পরিবেশে এমন পাপী খুঁজে পায় তার মুক্তি এবং পরিত্রাণের পথ। এজন্য এক হজ্বে মানুষের মন ভরে না। বারবার মক্কা-মদীনায় যাওয়ার জন্য পাগল মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। অর্থ-প্রাচুর্য এবং ঐশ্বর্য সব তার কাছে তুচ্ছ মনে হয়। সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য যে গোলামী, মানুষের মনে তার পূর্ণাঙ্গ অনুভূতি হয় এবং সে সব বাধা-বিপত্তি এড়িয়ে কাবার পানে গোলামী করার জন্য ছুটে চলে।
হজ্বের পূর্ণ ইবাদতসমূহ হাজীর মনে আলস্নাহর আসন তৈরী করে দেয়। নবীপ্রেম ও ভালোবাসা তৈরী করে। যিয়ারতে মদীনার আমেজে সে ভুলে যায় দুনিয়া এবং তার মোহকে। একটি হজ্বের সফরে সব ধরণের ইবাদত চর্চা হয়। যেহেতু পবিত্র হজ্ব আর্থিক এবং দৈহিক ইবাদত, এতে অর্থ এবং দেহ দু'টিরই পবিত্রতা সৃষ্টি হয়। পূর্ণ ঈমানদার এবং পাক্কা মুসলমান হওয়ার জন্য হজ্বের ভূমিকা অনন্য। হজ্বের প্রতিটি ইবাদত একজন মানুষের সবগুলো অঙ্গে অনুভূতির শিহরণ জাগায়। এতে এই মানুষটি গোটা জীবনের জন্য শুদ্ধ হয়ে যায়। দু'প্রস্থ সাদা কাপড় তার মন-মানসিকতায় নাড়া দিয়ে তাকে আখেরাতের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাসী বানায়, যে কারণে পবিত্র হজ্বে হাজী একজন পূর্ণাঙ্গ ঈমানদার এবং নবজাতক শিশুর ন্যায় মাসুম হয়ে দেশে ফেরে।
|
|
|
|
|